সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ তায়ালা যিনি আমাদেরকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে সৃষ্টির পাশাপাশি সর্বশ্রেষ্ঠ নবীর সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মত হওয়ার তাওফীক দান করেছেন। সাথে সাথে সাইয়্যেদুল মুরসালিন রাহমাতুল্লিল আলামিনের দরবারে অসংখ্য দরুদ ও সালাম পেশ করছি, যে নবীকে আল্লাহ তায়ালা “ ওরাফায়ানা লাকা জিকরাকা” এর মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন। আমি অত্যন্ত শোকরিয়ার সাথে আনন্দিত ও গর্বিত যে আমরা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের মাদরাসা “ fatehpurfazilmadrasah.edu.bd” নামক একটি ওয়েব সাইট প্রকাশ করতে পেরেছি। বর্তমান সময়ে ওয়েব সাইট একটি যুগপোযুগী উন্নত যোগাযোগ মাধ্যম । এটি একটি প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-শিক্ষক ও অভিভাবকসহ সকলের সার্বিক সহযোগিতা করে, তেমনি দূরশিক্ষন দিতে সাহায্য করে। এতে করে জাতিকে সুশিক্ষিত, দক্ষতা ,ভ্রাতৃতাবোধ ও স্বশিক্ষিত হিসেবে গড়ে তুলে। আমরা তথা আমাদের ফতেহপুর জামেউল উলুম ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসা এমন এক ইসলামিক আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠান যেখানে উন্নত, আদর্শ, যোগ্য নাগরিক তৈরি করতে সদা সচেষ্ট। মাদরাসার পরিচালনা পর্ষদ ও মাদরাসার দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষকদের ৩ স্তরের প্রচেষ্টায় শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়ন , তত্ত্বাবধান, মেধা বিকাশ, বিনোদন ও সকল পরিকল্পনার বাস্তবায়ন নিভিড়ভাবে করা হয়। এই ওয়েব সাইটের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করণ, সকল প্রকার ডাটা ও একাডেমিক কার্যক্রম ফি বেতন ঘরে বসেই ট্রানজিস্ট করতে সক্ষম হবে ইনশাল্লাহ।
এই কার্যক্রম যথাযথভাবে পালন করার জন্য অভিভাবকসহ , শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীদের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করি।
সমগ্র বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে অসংখ্য শোকরিয়া আদায় করছি, যিনি বিচার দিনের মালিক। সাথে সাথে হুজুর মকবুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চরণ যুগলে অগণিত দরুদ ও সালাম প্রেরণ করছি যিনি সাইয়্যেদুল মোরছালীন উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। দ্বীনি শিক্ষা হলো আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম। কেননা আল্লাহ তায়ালা যাকে পছন্দ করেন তাকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করেন। বর্তমান বিশ্বে ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন বিচ্ছিন্ন কোন জ্ঞান অর্জন নয়। তা ইহকালীন ও পরকালীন উভয় জাহানের মুক্তির নির্দেশনা বিদ্যমান রয়েছে। এ কারণে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিতরা দ্বীনি শিক্ষার পাশাপাশি জাগতিক বিভিন্ন বিষয়ে সমানতালে অবদান রেখে যাচ্ছে। সেজন্য আমরা দেখি দ্বীনি শিক্ষা যত বাঁধা পেরিয়ে নিজস্ব স্বকীয়তায় এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা দ্বীনি শিক্ষার প্রসারের একজন অংশীদার হতে পেরে গৌরবান্বিত। দ্বীনি শিক্ষার এ রকম একটি প্রতিষ্ঠান হলো – কামালে ইশকে মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাজিল (স্নাতক) মাদরাসা। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে উত্তরোত্তর উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মাদরাসার পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল তথা ঈর্ষান্বিত ফলাফল অর্জনের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতার সাফল্যের যোগসূত্র বললে চলে। ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপণী মেধাবৃত্তি থেকে শুরু করে জেডিসি , দাখিল, আলিম পরীক্ষা সর্বক্ষেত্রে অত্র প্রতিষ্ঠানের আলাদা অবস্থান রয়েছে। এ ক্রমবর্ধমান উন্নতিকে ধরে রাখতে ও বেগবান করতে আমরা বদ্ধ পরিকর। এ লক্ষ্যে আমরা চাই শিক্ষক , শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সমন্বিত প্রচেষ্টাকে প্রবাহমান রাখতে। এ লক্ষ্যে সকলের সার্বিক সহযোগিতা, কল্যাণমূলক উপদেশ ও গঠনমূলক সমালোচনা এবং দোয়া কামনা করছি।
ইসলামী সভ্যতা, সংস্কৃতি, চিন্তা-চেতনা তথা কুরআনিক শিক্ষাকে সম্প্রসারণের নিমিত্তে নবী করীম (সা.) বিভিন্ন এলাকায় মুয়াল্লিম বা শিক্ষক প্রেরণ করতে থাকেন। ফলে মদীনা মুনাওয়ারায় বিভিন্ন মহল্লায় মসজিদ ভিত্তিক এ ধরনের আরও অনেক মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। এভাবে স্বল্প দিনের ভেতরেই এ শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক খ্যাতি লাভ করে। ক্রমান্বয়ে এ শিক্ষা মদীনার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। মহানবী হযরত মুহম্মদ মুস্তফা (সা.)-এর জীবদ্দশাতেই আরব ভূ-খন্ডের দূর-দূরান্ত পর্যন্ত মসজিদ ভিত্তিক বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাদ্রাসা গড়ে ওঠে।
খোলাফায়ে রাশিদীনের সময় সাহাবায়ে কিরাম দীনি শিক্ষা প্রচার-প্রসারের লক্ষ্যে কুরআন-হাদীস নিয়ে পৃথিবীর দিগ্বিদিক ছড়িয়ে পড়েন। ফলে শিক্ষার পরিধি আরও সম্প্রসারিত হয়। এ সময় শিক্ষার মূল বিষয়বস্তু ছিল কুরআন-সুন্নাহ, ফারায়িজ ও অন্যান্য আরও কিছু নিয়ম ভিত্তিক শিক্ষা। এশিক্ষা চর্চা চলতে থাকে উমাইয়া শাসন আমলের (৪৩-১৩০ হিজরী) প্রাথমিককাল পর্যন্ত। ইসলামের প্রাথমিক শিক্ষাকাল হতে খলীফা উমর বিন আব্দুল আজীজ (রহঃ)-এর শাসনকালের পূর্বকাল পর্যন্ত সময়কে ঐতিহাসিকগণ ইসলামী শিক্ষার চর্চা ও শিক্ষা বিস্তারের প্রথম যুগ বলে অভিহিত করেছেন।
কালক্রমে সময়ের চাকা ঘুরতে ঘুরতে হযরত উমর বিন আব্দুল আজীজ (রহ.)-এর শাসনকালে শিক্ষা ব্যবস্থার এক নতুন ধারার সূচনা হয়। ইতিহাসবেত্তাদের মতে, এখান থেকে ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থার দ্বিতীয় যুগ আরম্ভ হয়। এ সময় থেকে কুরআনী শিক্ষাকে সর্বজনীন করে তোলার মহৎ উদ্দেশ্যে মুসলিম বিশ্বে সরকারি ফরমান জারি করা হয় এবং শিক্ষকদের জন্য সরকারিভাবে বেতন-ভাতা নির্ধারণ করা হয়। ফরমান ছিল এরূপ ‘‘যারা জড় জগতের সম্পর্ক ছিন্ন করে ইল্ম ও জ্ঞানার্জনের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে প্রস্তুত বা উৎসর্গ করেছেন, তাদেরকে আর্থিক সহযোগিতা হিসেবে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে প্রতি মাসে একশ স্বর্ণ মুদ্রার করে দেয়া হবে। এর পর ব্যাপকভাবে ইসলামী শিক্ষা বিস্তারের জন্য মসজিদে নববীর অনুকরণে সকল জায়গায় ইসলামী মসজিদ ভিত্তিক মাদরাসা স্থাপনের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহতভাবে চলতে থাকে। যার পরিপ্রেক্ষিতে সর্বত্র মসজিদ ভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু হয়ে যায়। (চলবে)
এ মাদরাসার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে সুপরিকল্পিত পাঠ্যক্রম, সহ-পাঠ্যক্রম কর্মসূচির যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ছাত্রদের শারীরিক ও মানসিক গুণাবলীর সর্বোচ্চ উৎকর্ষ সাধন যাতে তারা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে এবং ভবিষ্যতে দেশ ও জাতিকে উপযুক্ত নেতৃত্ব দিতে পারে।